এরিয়া ৫১ এর চারপাশে থাকা নোটিশবোর্ড |
যুক্তরাষ্ট্রের একটি অত্যন্ত গোপনীয়
ঘাঁটি হচ্ছে এরিয়া ৫১ (Area 51)। শুধু যুক্তরাষ্ট্রই নয় ধারনা করা হয় এটাই পৃথিবীর সবচেয়ে গোপনীয় স্থান।
এটি এতটাই গোপনীয় যে যুক্তরাষ্ট্র সরকার দীর্ঘদিন এর অস্তিত্বই স্বীকার করেনি।
মানচিত্র বা সড়ক নকশা কোন
কিছুতেই এরিয়া ৫১ এর উল্লেখ করা হত না। এর আকাশাসীমায় সামরিক বা বেসামরিক কোন
ধরনের বিমান প্রবেশ করতে পারে না (কেবল এরিয়া ৫১গামী বিশেষ বিমান ছাড়া)।
১৯৮৮ সালে সোভিয়েত রাশিয়া স্যাটেলাইটের মাধ্যমে নেয়া এরিয়া ৫১ এর ছবি প্রকাশ করলে প্রথমবারের মত যুক্তরাষ্ট্রের সাধারণ
মানুষ এলাকাটির ছবি দেখার সুযোগ পায়।
স্পাই স্যাটেলাইট থেকে ধারনকৃত "এরিয়া ৫১" এর ছবি |
যুক্তরাষ্ট্রের নেভাদা অঙ্গরাজ্যের দক্ষিণে
গ্রুম লেকের পাড়ে বিস্তীর্ণ অঞ্চল জুড়ে এর
অবস্থান।
এই এলাকাটির উদ্দেশ্য কি, সে সম্পর্কে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছুই বলে না
যুক্তরাষ্ট্র সরকার।
তবে এরিয়া ৫১ এর একজন সাবেক কর্মকর্তা একবার সংবাদ সম্মেলনে বলেন এরিয়া ৫১ এ ভিনগ্রহের প্রাণী বা এলিয়েনের ব্যাবচ্ছেদ করা হয় এমনকি সেখানে এলিয়েনদের একটি স্টারশিপ এবং একচি এলিয়েনের দেহাবশেষ রয়েছে।
Area 51 এর অবস্থান :- ৩৭ ১৪’৩৬.৫২”
উত্তর অক্ষাংশ এবং ১১৫ ৪৮’৪১.১৬” পশ্চিম দ্রাঘিমাংশ (37°14’36.52″N,115°48’41.16″W) এই স্থানাংক ব্যবহার করে গুগল আর্থের
মাধ্যমে এলাকাটির ছবি দেথা যায়। বাইরের
মানুষকে সেখানে প্রবেশ করতে দেয়া হয় না। এমনকি সেখানে যদি ভূলেও কোন মানুষ প্রবেশ করে তবে সে আর বের হতে পারে না !
‘প্রবেশ এবং ছবিতোলা নিষেধ, প্রবেশ করলে প্রাণঘাতী শক্তিপ্রয়োগ হবে’ এই মর্মে
নোটিশ টাঙিয়ে রাখা হয়েছে।
এখানে প্রবেশ করতে গিয়ে বহু কৌতূহলী মানুষের প্রাণ হয়ত
বলি হয়েছে বলে অনেকে বলেন। তবে এর কোন প্রমাণ নেই।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের অবমুক্ত করা দলিল থেকে জানা যায়, এখানে সামরিক বিমানের
পরীক্ষা চালানো হয়। তবে এখানে অন্যান্য
অস্ত্র এমনকি পারমাণবিক পরীক্ষাও চালানো হয় বলে শোনা যায়। এখানে বিমান ওড়ানোর
জন্য রানওয়ে, বিমান রাখার হ্যাঙ্গার
(বিশেষ ছাউনি) ছাড়াও গবেষণাগার রয়েছে।
এখানকার ভবনগুলোয় জানালা নেই এবং
বিমানের পরীক্ষামূলক উড্ডয়নের সময়
কর্মীদের ঘরের ভেতর রাখা হয় যাতে তারা
উড্ডয়ন দেখতে না পারে। একদলের গবেষক অন্য
দলের কার্যক্রম সম্পর্কে কিছু জানতে পারে
না।
যুক্তরাষ্ট্র সরকারের
কঠোর গোপনীয়তার
কারণে জল্পনা- কল্পনার ডালাপালার
বিস্তৃতিটাও অনেক
বেশি।
কেউ কেউ
বলেন, যুক্তরাষ্ট্র সরকার চাঁদে মানুষ
না পাঠিয়ে এ
স্থানেই ‘চাঁদে মানুষ পাঠানোর শ্যুটিং’
করেছিল।
এ এলাকাতেই সবচেয়ে বেশি ইউএফও
(Unidentified Flying Object) দেখা গেছে।
অনেকে বলেন এখান থেকেই এলিয়েনদের
সাথে যৌথ গবেষণা কার্যক্রম চালাচ্ছে
যুক্তরাষ্ট্র।
এলিয়েনরা প্রজনন ক্ষমতা
হারিয়ে ফেলায় মানুষের সাথে হাইব্রিডাইজ
বা সংকরায়ন করার চেষ্টা হচ্ছে। এখানে
এলিয়েনদের দেহ সংরক্ষিত আছে গবেষণার
জন্য।
প্রচলিত কথার মধ্যে আরও রয়েছে, এখানে
মাটির অনেক নিচে গবেষণাগার আছে, অন্য
গবেষণাগারের সাথে পাতালরেল যোগাযোগ
আছে। এখানে যারা কাজ করে তাদের
গোপনীয়তার শপথ নিতে হয়।
সেমিকন্ডাক্টর
প্রযুক্তিসহ অনেক প্রযুক্তিই আসলে
এলিয়েনদের প্রযুক্তি, নইলে এত দ্রুত প্রযুক্তির
এত উন্নতি হওয়ার কথা নয়; এমন কথাও বলেন
অনেকে।
এসব তথ্যকে আজগুবি তথ্য বলেই মনে করা হয়।
কিন্তু গোপনীয়তা এসব তথ্যকে কিছুটা হলেও
জনপ্রিয় করতে পেরেছে।
U-2 গোয়েন্দা
বিমান যখন উদ্ভাবিত হয় তখন সেটি ছিল
সবচেয়ে বেশি উচ্চতায় উড্ডয়নকারী বিমান।
এমন উচ্চতায় বিমান থাকতে পারে এটা কেউ
তখন ভাবতো না।
আর তাই সেটাকে ইউএফও ভেবে ভুল করেছে বলে ব্যাখ্যা দেয়া হয়।
0 comments:
Post a Comment
পোস্টটি পড়ার পর যদি আপনার এ সম্পর্কিত কোন সমস্যা, তথ্য বা ত্রুটি পেয়ে থাকেন তবে দয়াকরে একটি কমেন্ট করুন।